তথ্যপ্রযুক্তি’র সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোর আহ্বান রাষ্ট্রপতির

প্রকাশিত: ১১:০১ অপরাহ্ণ , ডিসেম্বর ১২, ২০২০

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ আজ তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) খাতের উন্নয়ন সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি খাত সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখার আহ্বান জানিয়েছেন। শনিবার রাজধানীর বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল (বিসিসি) মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে ‘চতুর্থ ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস’ উদ্বোধনকালে রাষ্ট্রপতি ভিডিও বার্তার মাধ্যমে এ কথা বলেন। ওই অনুষ্ঠানে এবারের ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের কার্যক্রম রাষ্ট্রপতি উদ্বোধন করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘প্রযুক্তি উন্নয়নের হাতিয়ার। তাই অনুকরণের পরিবর্তে আমাদের উদ্ভাবনের ওপর জোর দিতে হবে।’ তিনি বলেন, ‘জিডিটাল বাংলাদেশের সুফল মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আমাদের নতুন ও পরিবর্তিত প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে।’

আব্দুল হামিদ বলেন, তথ্যপ্রযুক্তি হচ্ছে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার। এর ফলে বিশ্বব্যাপী উন্নয়ন ও অগ্রগতির অপার সম্ভাবনার পাশাপাশি বহুমুখী চ্যালেঞ্জেরও সৃষ্টি হয়েছে। নতুন নতুন আবিষ্কারের ফলে প্রযুক্তি দ্রুত পরিরর্তিত হচ্ছে। এমনকি প্রযুক্তি এতোটাই দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে যে- এর ফলে অনেক প্রযুক্তি অচল হয়ে যাচ্ছে। তিনি সকল-ক্ষেত্রে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি অপব্যবহার রোধ এবং এ লক্ষ্যে প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, আমাদের তথ্যপ্রযুক্তির ফলে সৃষ্ট সকল সুযোগকে যথাযথভাবে কাজে লাগানোর পাশাপাশি এর অপব্যবহার রোধে সক্ষমতা অর্জন করতে হবে।’ বুদ্ধিমত্তা ও নতুন প্রযুক্তির সাথে খাপ খাইয়ে নেয়ার সক্ষমতার দিক থেকে যুবসমাজকে যথেষ্ট দক্ষ ও উদ্যোগী উল্লেখ করে আব্দুল হামিদ বলেন, ‘এজন্য, তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণ প্রদান করা হলে, তারা দেশকে কাক্সিক্ষত উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছে দিবে।’

কোভিড-১৯ মহামারীকালে ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পালনের গুরুত্ব তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘মুজিব শতবর্ষে দাঁড়িয়ে আমাদের একইসাথে অনেকগুলো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে। দুনিয়া বদলে দেওয়া করোনা মহামারী মোকাবিলার পাশাপাশি দেশের অর্থনীতি সচল রাখতে সরকার নিরলস প্রয়াস চালাচ্ছে।’ তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তির কল্যাণে করোনা মহামারীর এই কঠিন সময়ে দূরে থেকেও আমরা পরস্পর সংযুক্ত থাকতে পারছি। চতুর্থবারের মতো ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপযাপনের এই আয়োজন বিশেষ গুরুত্ব বহন করে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে গ্রাম ও শহরের মধ্যে দূরত্ব হ্রাস পাচ্ছে।’ আব্দুল হামিদ বলেন, গত তিন বছর ধরে ১২ ডিসেম্বর ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস পালন করে আসছে আইসিটি ডিভিশন। এবার এর চতুর্থ আসর। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতিহার অনুযায়ী এবারের ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ‘যদিও মানছি দূরত্ব, তবুও আছি সংযুক্ত’।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচি তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি বলেন, “জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবাষির্কী ও আমাদের স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী’র একটা যুগসন্ধিক্ষণ হচ্ছে ২০২১ সাল। এই যুগসন্ধিক্ষণে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের ‘সোনার বাংলা’ গঠনে আমাদের নিরলস প্রয়াস চালাতে হবে। ২০২১ সালের মধ্যে ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ গঠনে সফলতার পথ ধরে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ গঠনের পথে আরও সাহস ও আত্মবিশ্বাসের সাথে এগিয়ে যেতে পারবো এ প্রত্যাশা করছি।

রাষ্ট্রপতি আশা করেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে একটি ‘উন্নত বাংলাদেশ’ গড়ে তুলতে ‘জিডিটাল বাংলাদেশ’ গঠনের সফলতার পথ ধরে আমরা আরো সাহসিকতা ও আত্মবিশ্বাসের সাথে সামনে এগিয়ে যেতে পারব।’

অনুষ্ঠানে, ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বাস্তবায়নে অসামান্য অবদান রাখার জন্য ১৫ ব্যক্তি, দল ও প্রতিষ্ঠানকে পুরস্কার দেওয়া হয়। এছাড়া ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস উপলক্ষ্যে অনুষ্ঠানে শিশুশিল্পীদের একটি নাটিকার ভিডিও প্রদর্শন করা হয়।

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে ভিডিও বার্তায় অন্যান্যের মাঝে উপস্থিতি ছিলেন ডাক, টেলি যোগাযোগ ও তথ্য-প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি একেএম রহমতুল্লাহ্, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এনএম জিয়াউল আলম এবং বঙ্গভবন সংশ্লিষ্ট সচিবগণ।

Loading